প্রত্যয় ডেস্ক: ব্রিটেন, ফ্রান্স, স্পেনসহ ইউরোপের একাধিক দেশ করোনা সংক্রমণ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে৷ স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর চাপের পাশাপাশি অর্থনীতিরও ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কাও বাড়ছে৷ করোনা সংক্রমণের ‘দ্বিতীয় ঢেউ’-এর জের ধরে ইউরোপে আরও কড়াকড়ি বাড়ছে৷ গ্রীষ্মের বিদায়ের পর বদ্ধ জায়গায় মানুষের সমাবেশের কারণে সংক্রমণের হার আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷ এক আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পর খোদ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েন এক দিনের জন্য নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ একই কারণে লিথুয়েনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিনাস লিনকেভিসিয়ুসও এক সপ্তাহের জন্য নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখছেন৷
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী গোটা বিশ্বে প্রায় তিন কোটি ৫৩ লাখ নথিভুক্ত করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে৷ তার মধ্যে প্রায় ৬০ লাখ ইউরোপেই চিহ্নিত হয়েছে৷ তবে সোমবার এই সংস্থা জানিয়েছে যে, নথিভুক্ত সংক্রমণের বাইরেও বিশাল সংখ্যক মানুষ সম্ভবত এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন৷ ডাব্লিউএইচও-র ধারণা, গোটা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ এর মধ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়েছে৷
ইউরোপে করোনা মহামারির কারণে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত হচ্ছে ব্রিটেন৷ রবিবার সে দেশে আক্রান্তদের সংখ্যা পাঁচ লাখ পেরিয়ে গেছে৷ সংক্রমণ বেড়ে চলায় প্রতিবেশী দেশ আয়ারল্যান্ড গোটা দেশজুড়ে আবার লকডাউন ঘোষণার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছে৷
ফ্রান্সে করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে চলায় কর্তৃপক্ষ কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে৷ শুধু গত শনিবারই প্রায় ১৭,০০০ মানুষ নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন৷ মঙ্গলবার থেকে প্যারিসে সব বার ও ক্যাফে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে৷ স্পেনে সংক্রমণ পরিস্থিতি অনুযায়ী স্থানীয় পর্যায়ে আংশিক লকডাউন কার্যকর করা হচ্ছে৷ কড়াকড়ির আওতায় রাজধানী মাদ্রিদসহ মোট ১২টি শহরের মানুষ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া পৌর সীমানা ছেড়ে যেতে পারছেন না৷
করোনা সংকটের অর্থনৈতিক ধাক্কা সামলাতে মঙ্গলবার বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির প্রধানরা আলোচনা করছেন৷ মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ, ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ব্যাংক ও জাপানের শীর্ষ কর্মকর্তারা ভারচুয়াল বৈঠকে পরিস্থিতির পর্যালোচনা করছেন৷ বিশ্বজুড়ে মন্দা প্রতিরোধ করতে তাঁরা ইতোমধ্যেই বিশাল অঙ্কের অর্থ ঢালার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ মঙ্গলবার তাঁরা আরও পদক্ষেপের ঘোষণা করতে চলেছেন৷
এই সব দেশের নির্বাচিত সরকার প্রধানরাও সম্ভবত আরো অর্থনৈতিক প্রনোদনা ঘোষণা করতে চলেছেন৷ তবে বর্তমান সংকট কাটার কোনো লক্ষণ দেখা না দেওয়ায় অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে৷ অর্থনীতিকে কৃত্রিমভাবে চাঙা রাখার প্রচেষ্টার সীমা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা৷